বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ, নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ, যার জনসংখ্যা ১৭ কোটি । এটি ভারতের ঠিক পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত। জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলিতে বাংলাদেশ অনন্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে, সেই প্রবৃদ্ধি বন্টন হয়েছে অসমভাবে । বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলাটি মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে ২০১৭ সালে পালিয়ে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর আশ্রয়স্থল।

Bangladesh-map
logo-gage

বাংলাদেশের প্রকাশনা অন্বেষণ করুন

বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ প্রকাশনার একটি সংকলিত সংগ্রহ আবিষ্কার করুন।

অন্বেষণ

GAGE গবেষণার সারসংক্ষেপ:

বাংলাদেশে GAGE ​​গবেষণা তরুণদের বহুমাত্রিক সক্ষমতা এবং বয়ঃসন্ধিকালের মধ্য দিয়ে এবং তরুণ বয়সে প্রবেশের সময় তারা যে সুযোগ এবং ঝুঁকির মুখোমুখি হয়, আর সেগুলো তাদের লিঙ্গ, বাসস্থান এবং শরণার্থী অবস্থান, প্রতিবন্ধীত্ব এবং বৈবাহিক অবস্থা সহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুসারে পরিবর্তিত হয়, তা অনুসন্ধান করে। GAGE গবেষণা তরুণদের জন্য পরিকল্পিত কর্মসূচি ও পরিষেবাগুলির পাশাপাশি, সময়ের সাথে সাথে এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ কিভাবে তাদের জীবনযাত্রা এবং উন্নতির পথে প্রভাব ফেলে, তা তুলে ধরে।

বাংলাদেশে GAGE এর তিনটি স্বতন্ত্র কার্যক্রম রয়েছে, যার সবগুলোই দীর্ঘমেয়াদী এবং মিশ্র পদ্ধতি ব্যবহার করে। প্রথমত, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের Yale বিশ্ববিদ্যালয়, UNHCR এবং বিশ্বব্যাংকের সাথে অংশীদারিত্বে কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প ও স্থানীয় সম্প্রদায়ে (Host Community) বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশী কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করছি। দ্বিতীয়ত, আমরা বাংলাদেশের সরকার, বিশ্বব্যাংক এবং Room to Read এর সাথে অংশীদারিত্বে, চট্টগ্রাম ও সিলেট জেলায় একটি র‍্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়ালের মাধ্যমে, কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষাগত ফলাফলকে সহায়তা করার লক্ষ্যে 'Girl Rising' ও 'Growth Mindset' নামে দুটি দূরবর্তী কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন করছি। তৃতীয়ত, ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, GAGE ঢাকা শহরের নিম্ন-আয়ের বসতি এলাকায় থাকা কিশোর-কিশোরীদের একটি গ্রুপ এর উপর গবেষণা করে নগর দারিদ্র ও এর প্রভাব কিশোরদের সক্ষমতার উপর কীভাবে পড়ে তা অন্বেষণ করেছে। অনুসন্ধান করে

বাংলাদেশে, GAGE ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এর ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (BIGD) ও জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ (JPGSPH) TAI, সোশ্যাল ফাউন্ডেশন, এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাথে অংশীদারিত্বে কাজ করে।

GAGE গবেষণার সময়রেখা

২০১৭–২০২০ (গবেষণার উপর নির্ভর করে)

বেসলাইন

২০২০–২০২১

কোভিড-১৯ তথ্য সংগ্রহের রাউন্ড

২০২২–২০২৩

মধ্যরেখা

২০২৪–২০২৫

শেষ লাইন

গবেষণা পদ্ধতি

বাংলাদেশে, GAGE গবেষণা ও প্রভাব মূল্যায়ন এর ক্ষেত্রে মিশ্র-পদ্ধতি (mixed-methods) প্রয়োগ করেছে। পরিমাপগত জরিপ, যেটি তরুণদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শারীরিক নিরাপত্তা ও সহিংসতা থেকে মুক্তি, মানসিক সুস্থতা, মতপ্রকাশ ও ক্ষমতায়ন, এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে, তা কিশোর-কিশোরীদের দুইটি দলের ওপর পরিচালিত হয়েছে। প্রথম দলটি প্রাথমিক জরিপে (baseline) ১০ - ১২ বছর বয়সী এবং দ্বিতীয় দলটি ১৫ - ১৭ বছর বয়সী ছিল। পাশাপাশি, অভিভাবকদেরও জরিপের আওতায় আনা হয়েছে। গুণগত গবেষণায় কিশোর-কিশোরী, তাদের অভিভাবক, এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রধান তথ্যদাতাদের সাথে ব্যাক্তিগত ও দলগত সাক্ষাৎকার  গ্রহণ করা হয়েছে। এসকল সাক্ষাৎকারের জন্য বয়স এবং প্রেক্ষাপট  অনুযায়ী বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত গবেষণা পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রধান তথ্যদাতাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন শিক্ষক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী, সমাজের নেতা, ঐতিহ্যগত ও ধর্মীয় নেতা, এবং যারা নীতিমালা ও কর্মসূচির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।

নমুনা

বাংলাদেশে, বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে, GAGE ৭,০০০ এর বেশি তরুণকে পরিমাণগত জরিপের মাধ্যমে এবং প্রায় ২৫০ জনকে গুণগত গবেষণার মাধ্যমে অধ্যয়ন করছে। এই গবেষণার লক্ষ্য তরুণদের জীবনযাত্রা, প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনাকে গভীরভাবে বোঝা। 

GAGE এর নমুনায় সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক ও যাদের কাছে পৌঁছানো সাধারণত সবচেয়ে কঠিন সেইসব তরুণ-তরুণীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণ-তরুণী, শরণার্থী কিশোর-কিশোরী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (প্রতিবন্ধী) তরুণ-তরুণী, বাল্যবিবাহের শিকার ব্যক্তি, স্কুলের বাইরে থাকা শিশু-কিশোর, এবং শিশুবয়সে অভিবাসী হওয়া তরুণ-তরুণীরা। গবেষণাটি এই তরুণ-তরুণীদের জীবনের বাস্তবতা, সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা বিশ্লেষণ করে, এবং এর মাধ্যমে নীতি নির্ধারকদের জন্য কার্যকরী দিকনির্দেশনা প্রদান করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে।

মূল ফলাফল

বাংলাদেশে GAGE গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে, শিক্ষাগত পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত কঠিন ও দীর্ঘস্থায়ী প্রতিবন্ধকতাগুলি এখনও বিদ্যমান এবং কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার মাধ্যমে আয় অর্জনের সম্ভাবনা পরিবারিক সম্পদ এবং সামাজিক নীতিমালার দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। যদিও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বাল্যবিবাহের প্রতি মনোভাব পরিবর্তন হচ্ছে, তবে এই প্রথা বিশেষত দরিদ্র ও গ্রামীণ মেয়েদের, এবং রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত মেয়েদের জন্য ব্যাপকভাবে বিদ্যমান। এই প্রচলন কিশোর-কিশোরীদের স্বপ্ন এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সীমাবদ্ধ করছে। বাল্যবিবাহ প্রায়শই অকাল গর্ভাবস্থা, ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সহিংসতা এবং মনোসামাজিক চাপের সৃষ্টি করে এবং এই প্রভাবগুলি মোকাবেলা করার জন্য কিশোর-কিশোরীদের উপযোগী এবং বহুমাত্রিক সেবা পাওয়ার সুযোগ সীমিত। এছাড়াও, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকিগুলি পূর্বের কিশোর-কিশোরীদের দুর্বলতা এবং অসমতাকে আরও তীব্র করে তুলছে, এবং দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কিশোর-কিশোরীরা আরও পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ প্রকাশনা

বাংলাদেশের সকল প্রকাশনা দেখুন